মঙ্গলবার, ১৯ অগাস্ট ২০২৫, ০১:২৩ পূর্বাহ্ন
ঘর খালি করার নামে প্রতিমা বের করে ঘর তালাবদ্ধ এবং প্রতিমাগুলো খোলা আকাশের নিচে ফেলে রাখার ঘটনায় ফুসে উঠে সনাতন হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন। এ ধরনের ন্যাক্কারজনক কাজে যারা জড়িত রয়েছে তাদেরকে উপযুক্ত বিচারের দাবী জানান তারা। গত ৬ই ডিসেম্বর দুপুর আনুমানিক ১২টায় মাসদাইর পৌর মহা শ্মশানে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের উচ্ছেদ অফিসার হিরন এবং শ্যামল পালসহ শ্মশানের সভাপতি ও সেক্রেটারী দাবীদার সংকর সাহা ও সুজন সাহাগং এ ন্যাক্কারজনক কাজের জন্ম দেন বলে জানান সেখানে উপস্থিত সবাই।
সরেজমিনে ৭ ডিসেম্বর সেখানে গিয়ে দেখা যায় যে,বৈরী আবহাওয়ার কারনে সেদিন সারাদিন বৃষ্টিপাত হয়েছে এবং ঘর থেকে বের করে রাখা মহাকাল ভৈরব, মা শ্যামা কালীর পাথরের প্রতিমা, গনেশের প্রতিমা, শ্রীকৃঞ্চ ভগবানের প্রতিমা, লক্ষী প্রতিমাগুলো বৃষ্টির পানিতে ভিজতে থাকে। এ সময় সেখানে থাকা সনাতন ধর্মের কিছু লোকজন পলিথিন দিয়ে ঢেকে দিয়ে তা রক্ষা করেন। গত ৬ তারিখের পর থেকে হিন্দু সম্প্রদায়ের সকল শ্রেনীর লোকজন এসে দেখতে পায় যে উক্ত প্রতিমাগুলো রোদে শুকাচ্ছে আর শীতের কুয়াশায় তা ভিজে যাচ্ছে। যা দেখা মাত্রই নিন্দা জানাচ্ছেন হিরন এবং শ্যামল পালসহ শ্মশানের সভাপতি ও সেক্রেটারী দাবীদার সংকর সাহা ও সুজন সাহাগংদের প্রতি।
তারা অনেকেই বলেন,এখানে যে কাজটুকু তারা করেছেন তা সত্যিই নিন্দনীয় কাজ। তারা অন্তত এতটুকু পারতো যে যার ঘরে এগুলো রক্ষিত ছিলো তাকে জানিয়ে অন্যত্র নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করতে। কিন্তু তারা সেটুকু না করে নিজেদেরকে হুকুমের গোলাম হিসেবে জাহির করেছেন আর আমাদের মনে আঘাত করেছেন। তারা বলেন,অনতিবিলম্বে মহাকাল ভৈরব, মা শ্যামা কালীর পাথরের প্রতিমা, গনেশের প্রতিমা, শ্রীকৃঞ্চ ভগবানের প্রতিমা, লক্ষী প্রতিমাগুলো যথাস্থানে রাখার অনুরোধ করছি নতুবা মা’কে অপমানের কারনে আমরাও কিন্তু তাদেরকে অপমান করতে বাধ্য হবো।
তারা আরও বলেন, টনির পুর্ব পুরুষরা এখানেই বসবাস করেছেন। তারা ছাড়াও টনির বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ নেই আমাদের। একটি কুচক্রী মহল নিজেদের অপরাধ ঢাকতে টনির বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করে অপবাদ দিয়ে তাকে এখান থেকে বাহির করেছেন। তারা বলেন,মাননীয় মেয়র মহোদয় একজন বিচক্ষন মানুষ। তার প্রতি অনুরোধ থাকবে তিনি যেন পুরো বিষয়টি ভালভাবে তদন্ত করে প্রকৃত অপরাধীকে খুজে বের করে শাস্তি দিবেন এবং টনিকে ন্যায় বিচার প্রাপ্তিসহ অত্র মহা শ্মশানে পুর্নবহাল করবেন।
এ বিষয়ে জেলা পুজা উদযাপন কমিটির সাধারন সম্পাদক শিপন সরকার শিখন এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান,বিষয়টি আমি আপনার কাছে জানতে পারলাম যা আমাকে কেউ বলেননি। তবে যারা একাজটি করেছেন তা অত্যন্ত দুঃখজনক। আমি বিষয়টি নিয়ে দেখছি তবে যারা এ কাজটি করেছেন তাদেরকে অবশ্যই কেউ ভাল চোখে দেখবেন না।
এ বিষয়ে টনি সনাতন বলেন, হিরন এবং শ্যামল পালসহ শ্মশানের সভাপতি ও সেক্রেটারী দাবীদার সংকর সাহা ও সুজন সাহাগংরা যে কাজটি করেছেন সে বিষয়ে বলার আমার কোন ভাষা নেই। এ বিষয়ে আমি আমাদের সম্প্রদায়ের বিভিন্ন সংস্থাকে লিখিতভাবে অবগত করেছি। তারা সকলেই আমাকে আশ^স্ত করেছেন এ বিষয়ে আমি ন্যায় বিচার পাইবো। তিনি আরও বলেন, হঠাৎ ৩ মাসে পুর্বে হিরন এবং শ্যামল পালগংরা আমাকে মহাশ্মশানের সেই ঘর থেকে পরিবারসহ উচ্ছেদ করে। আমি তাদের কাছে কিছুদিনের সময় চাইলে তারা সময় না দিয়ে এবং কালক্ষেপন না করে ঘর থেকে পরিবারসহ উচ্ছেদ করে ঘরটি তালাবদ্ধ করে যান। এ সময় আমি আমার ঘরের সমস্ত মালামাল নিয়ে গেলেও সেই ঘরে রক্ষিত মহাকাল ভৈরব, মা শ্যামা কালীর পাথরের প্রতিমা, গনেশের প্রতিমা, শ্রীকৃঞ্চ ভগবানের প্রতিমা, লক্ষী প্রতিমাগুলো উক্ত ঘরে রেখে আসি। এবং তাদেরকে এও বলি যে, আমি এখানে উক্ত প্রতিমাগুলো নিত্যপুজা করি আপনারা দয়া করে ঘরের চাবিটি দিয়ে যান কিন্ত তারা সেটা দেয়নি। তারা ৬ তারিখে উক্ত ঘরে রক্ষিত মা শ্যামা কালীর পাথরের প্রতিমা, গনেশের প্রতিমা, শ্রীকৃঞ্চ ভগবানের প্রতিমা, লক্ষ্মী প্রতিমাসহ বেশ কয়েকটি প্রতিমাগুলো ঘর থেকে বাহিরে ফেলে দেয়। এবং শ্যামা কালি ও শিব লিঙ্গ এর চোখের মনিগুলো চাকু দিয়ে খুচিয়ে উঠিয়ে নিয়ে যায়।
Dhaka, Bangladesh মঙ্গলবার, ১৯ আগস্ট, ২০২৫ ২৫ সফর, ১৪৪৭ | |
ওয়াক্ত | সময় |
সুবহে সাদিক | ভোর ৪:১৬ |
সূর্যোদয় | ভোর ৫:৩৬ |
যোহর | দুপুর ১২:০২ |
আছর | বিকাল ৩:২৯ |
মাগরিব | সন্ধ্যা ৬:২৮ |
এশা | রাত ৭:৪৭ |
আপনার মতামত কমেন্টস করুন